বেহেশতী জেওর বইয়ে বর্ণিত হাদিসের নামে বা ধর্মের নামে বা ইসলামের নামে কিছু ভুল বা জাল ফতোয়া বা বর্ণনা

0

Advertise with Anonymous Ads

বেহেশতী জেওর বইয়ে বর্ণিত হাদিসের নামে বা ধর্মের নামে বা ইসলামের নামে কিছু ভুল বা জাল ফতোয়া বা বর্ণনা

আযানের দু’আ প্রচলিত ভুলঃ আমাদের দেশে রেডিও, টিভি ইত্যাদি প্রচার মাধ্যমে এবং বিভিন্ন ফিকহী গ্রন্থে কিছু অতিরিক্ত শব্দ বলা হয়, যেমনঃ ‘ওয়াদারাজাতির রাফিয়া’ এবং ‘ইন্নাকালা তুখলিফুল মি‘আদ’ (বেহেশতী জেওর,২য় খন্ড ১২২ পৃঃ, মাসআলা-৯)
[সঠিক পদ্ধতিঃ নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ‘‘যে ব্যক্তি আযান শুনে দু’আ করে-আল্লা হুম্মা রববা হা-যিহিদ দা’ওয়াতিত তাম্মাহ, ওয়াছ ছলা-তিল ক্বা-য়িমাহ, আ-তি মুহাম্মাদানিল ওয়াসীলাতা ওয়াল ফাযীলা, ওয়াব‘আছহু মাক্বা-মাম মাহমূদানিল্লাযী ওয়া আত্ত্বাহ’- ক্বিয়ামাতের দিন সে আমার শাফা’আদ লাভের অধিকারী হবে।’ (সহীহুল বুখারী হা/৬১৪ পৃঃ ২৯৮) উল্লেখ্য যে, আযানের জওয়াব দান শেষে প্রথমে দরুদ পড়বে অতঃপর দু’আ পাঠ করবে। (সহীহ মুসলিম, মিশকাত হা/৬৫৭)]
প্রচলিত ভুলঃ উযূর প্রথমে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ, অথবা আলহামদুলিল্লাহ অথবা আশহাদু আল্লাইলাহা ইল্লাল্লাহ পাঠ করলে বিসমিল্লাহ পাঠের সুন্নাত আদায় হয়ে যায়। (ফাতোয়ায়ে আলমগিরী, তাজ কোঃ ১/৩০ পৃঃ) তাছাড়া প্রত্যেক অঙ্গ ধোয়ার জন্য পৃথক পৃথক দু’আর প্রচলন আছে। (বেহেশতী জেওর-১/৯৮,৯৯,১০, ফতোয়ায়ে আলমগীরী তাজ কোঃ ১/৩৪ পৃঃ)
[সঠিক পদ্ধতিঃ আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ‘‘সে ব্যক্তির সলাত হয় না, যার উযূ নেই। আর যে ব্যক্তি উযূর সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলে না, তার উযূ হয় না। (সহীহ মুসলিম ২/৩২, তিরমিযী-১/২৯ পৃঃ ইফাবা, ইবনে মাজাহ-১/১৭৯ পৃঃ, আবু দাউদ-১/৫১ পৃঃ, মিশকাত-২/৩৭০) উল্লেখ্য যে, শুরুতে বিসমিল্লাহ ছাড়া মধ্যখানে প্রত্যেক অঙ্গ ধোয়ার কোন আলাদা দু’আ সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়। সুতরাং কেউ তা করলে বিদ’আত হবে।]
প্রচলিত ভুলঃ কেউ কোন কারণবশত ফজরের সুন্নাত পড়তে না পারে তা‘হলে সূর্য উঠার পর পড়তে হবে। (বেহেস্তী জেওর)
[সঠিক পদ্ধতিঃ জামা‘আতের জন্য ইক্বামত হলে ফরয সলাত ব্যতীত অন্য কোন (সুন্নাত বা নফল) সলাত হবেনা (তিরমিযী, সহীহ্ মুসলিম, মিশকাত-হা/১০৫৬) অতএব ফজরের ইক্বামত হওয়ায় সুন্নাত না পড়ে আমা‘আতের সাথে ফরয পড়ে নিতে হবে। অতঃপর ফরয শেষ করে (সূর্য ওঠার আগেই) দু’রাক‘আত সুন্নাত পড়ে নিবে। এটাই সুন্নাতি নিয়ম। (তিরমিযী, আবু দাউদ, মিশকাত ৯৭ পৃঃ সহীহ্)
(যদি একান্ত কোন কারনে ফরজ সালাত শেষ হবার পর সময় না পায় যেমন যদি কারো টয়লেটে গিয়ে সময় পার হয়ে যাওয়া বা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যাওয়া বা যা ওজর বলে গন্য শরীয়তের দৃষ্টিতে এমন কারনে যদি কারো সময় পার হয়ে যায় তাহলে সূর্য উঠার পর তা আদায় করে নিবে। – বাংলা হাদিস)]
প্রচলিত ভুলঃ মাথার এক-চতুর্থাংশ মাসাহ করা ফরয। মুথতাছার কুদুরী মাদ্রাসার ৯ম ও ১০ম শ্রেণীর পাঠ্য ৮ পৃঃ ফতোয়ায়ে আলমগিরী ২৮ পৃঃ বেহেশতী জেওর ১/৪১ পৃঃ ১৫ নং মাসআলায় মাথার অগ্রভাগ পরিমাণ মাসাহ করা ফরয। (হিদায়া আলমগীরী-৪৫ পৃঃ ১/ ইফবা মাথার সম্মুখভাগ মাসাহ না করে যদি কোন ব্যক্তি মাথার পেছনের অংশ অথবা ডান বা বাঁদিকে মাথার মধ্যাংশ মাসাহ করে তবে মাসাহ দুরস্ত হবে। (তাতারখানিয়া’ ফাতোয়ায়ে আলমগীরী-১/৪৫)
[সঠিক পদ্ধতিঃ রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম) উযূতে সম্পূর্ণ মাথা মাসাহ করতেন। যেহেতু আল্লাহ্ তা’আলা বলেছেনঃ ‘‘ওয়ামছাহু বিরুউসিকুম’’, অর্থাৎ তোমাদের মাথা সমূহ মাসাহ কর। (আল-মায়েদাঃ ৬) তার পর দু’হাত দিয়ে মাথা মাসাহ করলেন। অর্থাৎ হাত দু’টি সামনে এবং পেছনে নিলেন। মাথার সম্মুখভাগ থেকে শুরু করে উভয় হাত পেছনের চুলের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত নিলেন। তারপর আবার যেখান থেকে শুরু করেছিলেন, সেখানেই ফিরিয়ে আনলেন। (সহীহুল বুখারী ১/১৮৫, মুসলিম ১৮৬, ১৯১, ১৯২, ১৯৭, ১৯৯, ২/৭, ২৩৫, আহমাদ ১৪৪৫)]
প্রচলিত ভুলঃ প্রত্যেক ওয়াক্ত ফজর, যোহর, আছর, মাগরিব, এশা এবং বিত্র, জুমুআ, ঈদ ও অন্যান্য সলাত ফরয, সুন্নাত নফল এর জন্য পৃথক পৃথক আরবী নিয়্যাত পড়া হয়। (বেহেশতী জেওর ২/১৩০-১৩২ মাসআলা) অনুবাদে বলা হয়েছে ‘তবে বুযুর্গানে দ্বীন আরবী নিয়্যাত পছন্দ করিয়াছেন’ তাই আরবী নিয়্যাত করিতে পারিলে ভাল। নিম্মে আরবী নিয়্যাত লিখিয়া দেওয়া হইয়াছে। কিন্তু মূল কিতাবে নিয়্যাত লেখা নাই।
[সঠিক পদ্ধতিঃ আবারো বলছি নিয়্যাত করা ফরয কিন্তু মুখে উচ্চারণ করে পড়া বিদআত । নিয়্যাত নিয়ে আগে পোষ্ট করা হয়েছে তাই এখানে আর ব্যাখ্যা করলাম না । কারোর প্রয়োজন হলে আমাকে জানালে আমি তার ইনবক্সে বিস্তারিত দিয়ে দিবো । ]
প্রচলিত ভুলঃ আমাদের সমাজে আসরের সলাতের ওয়াক্ত আরম্ভ ধরা হয় যখন একটি বস্ত্তর আসল ছায়া বাদ দিয়ে অবশিষ্ট ছায়া ঐ বস্ত্তর দ্বিগুন হয়। (আল-হিদায়া ১ম খন্ড, সলাতের সময় অধ্যায়, ৫৯ পৃঃ বেহেশতি জেওর ১২২, ১২৩ পৃঃ মাসআল)
[সঠিক পদ্ধতিঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম) বলেনঃ ‘‘ আসরের সলাতের সময় আরম্ভ হয় যখন কোন বস্ত্তর ছায়া (পূর্ব দিকে অংশ) ঐ বস্ত্তর সমান হয়।’’ (সহীহ্ মুসলিম, ই.ফা.বা-২ হা/১২৬২ মিশকাত-২ হা/ ৫৩৪ মিশকাত মাদ্রাসার পাঠ্য-২ হা/৫৩৪, ৫৩৬ জামে তিরমিযী-১ হা/ ১৪৭ পৃঃ ১৮৯ বুলুগুল মারাম-১ হা/ ১২৭)]
[এমন আরো অনেক মিথ্যা/জাল বা দূর্বল বর্ণনা আছে যেগুলো লিখতে গেলে পোষ্টটি অনেক বড় হয়ে যাবে । তাই এই বেহেশতী জেওর বই পড়া থেকে সাবধান/ সতর্ক থাকুন ]

বিঃদ্রঃ যদি কেউ দাবি করেন বা সন্দেহ পোষণ করেন যে উপরে প্রদত্ত বক্তব্য গুলোর মধ্যে ভুল আছে বা যে কোন টা বুঝতে সমস্যা হচ্ছে বা আরো বিস্তারিত জানা দরকার তাহলে কমেন্ট বক্সে বিস্তারিত জানান । 



Advertise with Anonymous Ads

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)

Blog Archive

Search This Blog

LATEST IN TECH

Technology/feat-big

Facebook SDK

  • https://connect.facebook.net/en_US/sdk.js#xfbml=1&version=v9.0

Text

About Me

My Photo
RIR DEVELOPER COMPANY
View my complete profile

Main Tags

Followers

Categories

Categories

Subscribe Us

Pages